বউ পরকীয়া করে অন্যের সাথে পালিয়ে গেলে করনীয় কী??
স্বামী থাকা অবস্থায় স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে: আইন কী বলে?, কারো বিবাহিত স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলে আইনি প্রতিকার কী?, স্বামীর অজ্ঞাতে স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার: আইনি প্রতিকার কী?...
বউ পরকীয়া করে অন্যের সাথে পালিয়ে গেলে করনীয় কীঃ কারো বউ পরকীয়া করে অন্যের সাথে পালিয়ে গেলে কি কি আইনি পদক্ষেপ নেয়া যাবে সে সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে জানতে পারবেন, চলুন দেখে নেই প্রতারক বউ সাথে কি কি আইনি পদক্ষেপ নেয়া যাবে।
বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার ঘটনা বর্তমানে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর মধ্যে স্বামী কিংবা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পরবর্তী বিয়ের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।
এসব প্রতারণামূলক ঘটনা থেকে বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক জটিলতা ও সহিংসতা্র সৃষ্টি হয় যা বেশিরভাগ সময় আদালতে মোকদ্দমায় গড়ায়। বাংলাদেশে বিয়ে ও বিয়ে-বিচ্ছেদ পারিবারিক ধর্মীয় আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু বিয়ে সংক্রান্ত ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হয়।
দ্বিতীয় বিয়ে করা স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রথম স্বামীর আইনি প্রতিকার:
মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, প্রথম স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে সেই দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ, অকার্যকর ও বাতিল বলে গণ্য হবে। স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে করতে ইচ্ছুক হলে তাঁকে আবশ্যিকভাবে আগে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করতে হবে।
১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে প্রথম স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানপূর্বক ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হওয়া সাপেক্ষে নির্দিষ্ট ইদ্দতপালন শেষে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা যেতে পারে।
এই বিধান লঙ্ঘন করে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি স্বামীর জিম্মা থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করেন সেক্ষেত্রে প্রথম স্বামী সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারেন।
সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্ত্রী বাংলাদেশের ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারেন। সঙ্গে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
তবে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারার এই বিধানের ব্যতিক্রম হতে পারে যদি সেই স্ত্রী তার পূর্বের স্বামীর সাত বছর যাবত কোনো খোঁজ-খবর না পান, অথবা তিনি জীবিত থাকতে পারেন এমন কোনো তথ্য যদি জানা না যায়, তাহলে পরবর্তী স্বামীকে আসল ঘটনা জানিয়ে তাঁর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন। অর্থাৎ এই ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে শাস্তিযোগ্য হবে না।
করনীয়ঃ
বউ চুরির অভিযোগে নতুন বর, বরের আত্নীয়-স্বজন এবং বউ পালানোর সময় স্বর্ণ অলংকার, টাকা চুরির অভিযোগে বউ, শশুর-শাশুড়ি,শালা-শালী কে আসামি করে মামলা দিন। বউতো পাবেন না, সকল কে কোর্টের বারান্দায় দাড় করান।
প্রথমত পরকীয়ার সব প্রমাণ কালেক্ট করুন। এরপর বিয়ে করেছে এটারও প্রমাণ কালেক্ট করুন। এগুলো কালেক্ট না করে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে যাবেন না!
নিচের স্টেপগুলো ফলো করুন…
* কল রেকর্ড অল টাইম অন রাখুন।
* থানায় মিসিং কমপ্লেইন করুন।
* ব্যাভিচার করে দ্বিতীয় বিয়ে টিকবে না। ডিভোর্স কমপ্লিট হতে তিন মাস সময় লাগে। এর আগে বিয়ে হয়না। বিয়ে করেছে বললে মামলা করুন।
* যার সাথে পালিয়েছে তার নামে অপহরণ এবং ধর্ষণ মামলা করুন।
পুলিশ তদন্ত করে সব বের করলে সব বের হয়ে আসবে। আপনার স্ত্রী তো স্বীকার করবে না সে পরকীয়া করে। যে ব্যাটার সাথে ভেগেছে ঐ ব্যাটা অপহরণ এবং ধর্ষণের জন্য জেলে যাওয়ার ভয়ে সব স্বীকার করবে 😂 পরকীয়ার প্রমাণও দিয়ে দিবে নয়তো ধর্ষণ মামলা খাবে। 🤣 আপনি প্রমাণগুলি কালেক্ট করবেন এবং তাকে বলবেন তুই যদি কোর্টে স্বাক্ষী দেস ঐ মেয়ের বিরুদ্ধে এবং কিছু স্বাক্ষী জোগাড় করতে পারিস তাহলে মামলা তুলে নিব।
* Restitution of Conjugal Rights বা দাম্পত্য পুনরুদ্ধারের মামলা করুন। যাস্ট আপনার দোষ দিতে যেনো না পারে এজন্য।
* পরকীয়ার প্রমাণ এবং স্বাক্ষী দুটাই কালেক্ট হয়েছে। এখন আপনার স্ত্রী এবং তার মা বাবা সহ চৌদ্দগুষ্টির নামে মামলা দিন যাতে সবাই জানে তার চরিত্র কেমন। The Penal Code । Section 406, 420, 497, 307, 323, 379, 506, 34
* স্ত্রীর অবৈধ এবং বাতিল দ্বিতীয় বিয়ের জন্য মামলা করুন। সর্বোচ্চ 7 বছরের জেল। The Penal Code । Section 494, 420
* কাবিনের টাকা দাবী করলে, নিকটস্থ র্যাব অফিসে অভিযোগ দিন মেয়ে এবং মেয়ের ফ্যামিলি প্রতারক, কাবিন ব্যবসা করে।
* চুরির মামলা দিন। The Penal Code । section 379
* মানহানির মামলা দিন। The Penal Code ।Section 499
* ক্ষতিপূরণ মোকদ্দমা করুন 50 লক্ষ টাকার।
* এরপর তালাক দিয়ে বিদায় করে দিন।
এবং 2য় বিয়ের কার্ড করে তাকে জেলে, শ্বশুড় বাড়িতে দিয়ে আসবেন।
রাজনীতি এবং কুটনীতি না জানলে মামলা চালানো যায় না।
প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে স্ত্রীর পুনরায় বিয়ে: দ্বিতীয় স্বামীর আইনি প্রতিকার কী?
স্ত্রী যদি দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় যাকে বিয়ে করছেন তাঁর কাছে পূর্বের বিয়ের কথা গোপন করেন এবং দ্বিতীয় বা পরবর্তী স্বামী তা জানতে পারেন তাহলে সেটি দণ্ডবিধির ৪৯৫ ধারা অনুসারে একটি অপরাধ। যার ভিত্তিতে অপরাধীকে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদান করা হবে, সাথে অর্থদণ্ডও প্রযোজ্য হবে।
কারো বিবাহিত স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলে আইনি প্রতিকার কী?
অন্যের স্ত্রী জানা সত্ত্বেও কোনো বিবাহিত নারীকে কোনো পুরুষ যদি ফুসলিয়ে বা প্ররোচনার মাধ্যমে যৌনসঙ্গম করার উদ্দেশে কোথাও নিয়ে যায় বা একই উদ্দেশে কোথাও আটকে রাখে তাহলে সেটি একটি অপরাধ যা দণ্ডবিধির ৪৯৮ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডনীয়, অথবা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।
স্বামীর অজ্ঞাতে স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার: আইনি প্রতিকার কী?
দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় ব্যভিচারের শাস্তির উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো বিবাহিত নারীর সঙ্গে তার স্বামীর সম্মতি ছাড়া যৌনসঙ্গম করে এবং অনুরূপ যৌনসঙ্গম যদি ধর্ষণের অপরাধ না হয়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের দায়ে দায়ী হবে। যার শাস্তি ৭ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ উভয় দণ্ড। তবে ব্যভিচারের ক্ষেত্রে স্ত্রীলোকটির কোনো শাস্তির বিধান আইনে নেই।
আইনি প্রতিকার কোথায়, কীভাবে পাওয়া যাবে?
উপরোক্ত অপরাধের ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নিকটস্থ থানা বা আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর এজাহার দাখিল করা যায়, থানায় অভিযোগ গ্রহণ না করলে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করা যাবে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশে বিবাহ নিবন্ধনের আইনি বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও অনলাইন বা ডিজিটাল বিবাহ নিবন্ধন ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে এই সুযোগে বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকেন যা বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
যেকোনো বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, বিয়ের নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে, বিয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি-বিধান সম্বন্ধে সজাগ থাকতে হবে।
ধর্মীয়, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ ধারণ করতে হবে এবং বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার শিকার হলে আইনের আশ্রয় নিতে হবে। তাহলেই এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে আশা করা যায়।