প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখা চূড়ান্ত, প্রজ্ঞাপন জারি শিগগিরই
বেসরকারি স্কুল কলেজের নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে বিভিন্ন কলেজে কর্মরত প্রভাষকদের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ডিগ্রি পর্যায়ের কলেজের প্রভাষকদের চাকরির আট বছর পুর্তিতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হলেও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের প্রভাষকদের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
প্রভাষকদের পদোন্নতির মূল্যায়ন কিভাবে হবে সে লক্ষ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ রূপরেখা চূড়ান্ত করে ফেলেছে মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি। এ নীতিমালা ‘শিগগিরই’ জারি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সব কিছু ফাইনাল, এখন পরিপত্র জারির অপেক্ষা।
মন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানায়, নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে বেসরকারি কলেজ প্রভাষকদের পদোন্নতিতে সার্বিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতিকে দেওয়া হচ্ছে। মোট ৯টি সূচকের ভিত্তিতে প্রভাষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হবে।
নয়টি সূচকে প্রভাষকদের মূল্যায়নের পর অধ্যক্ষ তা গভর্নিং বডির সভায় উপস্থাপন করবেন। গভর্নিং বডির অনুমোদন পাওয়ার পর প্রভাষকরা অনলাইনে আঞ্চলিক পরিচালক বরাবর পদোন্নতির আবেদন করবেন।
এভাবেই প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখার খসড়া করা হয়েছে। এ খসড়া নিয়ে কয়েকদফা সভা করেছেন কর্মকর্তারা।
এরপর রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন পরিপত্র আকারে তা জারি করা হবে। তবে, প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখায় পদোন্নতির জন্য কি বিধান রাখা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে প্রভাষকদের পদোন্নতি রূপরেখা প্রণয়ন কমিটিতে থাকা একজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন শুধু পরিপত্র আকারে তা জারির অপেক্ষা।
তিনি বলেন, কমিটি পাঁচ দফা সভা করে রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে। আশা করছি খুব শিগগিরই তা পরিপত্র আকারে জারি করা হবে।
প্রভাষকদের পদোন্নতিতে কি বিধান রাখা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব পক্ষ যাতে সন্তুষ্ট থাকে সেসব দিক বিবেচনায় নিয়েই রূপরেখা তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আশা করছি খুব শিগগিরই এ রূপরেখা পরিপত্র জারি হয়ে প্রভাষকদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এর আগে রূপরেখা চূড়ান্ত কমিটিতে থাকা একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রভাষকদের পদোন্নতিতে কলেজের ব্যবস্থাপ্না কমিটির কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়ার বিধান থাকছে।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে বিভিন্ন কলেজে কর্মরত প্রভাষকদের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়।
চাকরির আট বছর পুর্তিতে ডিগ্রি পর্যায়ের কলেজের প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হলেও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের প্রভাষকদের চাকরির আট বছর পুর্তিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, মূল্যায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ একটি কমিটি গঠন করবে। সেই কমিটির সূচকগুলো মূল্যায়ন করে পদোন্নতি দেওয়া হবে। পদোন্নতির খসড়ায় সে কমিটি কিভাবে হবে, কে কে থাকবেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন নীতিমালায় প্রভাষকদের পদোন্নতিতে ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে। নীতিমালা অনুসারে, এমপিও প্রাপ্তির জ্যেষ্ঠতায় ১৫ নম্বর, পরীক্ষার ফলে ১৫ নম্বর, ক্লাসে উপস্থিতি ২০ নম্বর, নেতিবাচক রেকর্ডে না থাকলে ২০ নম্বর, বিভাগীয় মামলা না থাকলে ৫ নম্বর, সৃজনশীল দৃষ্টান্তে ১০ নম্বর, ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়ার দক্ষতায় ১০ নম্বর, এমফিল-পিএইচডিতে ৫ নম্বর, গবেষণা কর্ম ও স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধ থাকলে ১০ নম্বরসহ মোট ১০০ নম্বরে মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রভাষকদের পদোন্নতির সুযোগ রেখে রূপরেখার খসড়া করা হয়েছিল।