মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো কি কি?
আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা মোবাইল আসক্তি কি (what is smartphone addiction in Bengali), মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়, মোবাইল থেকে দূরে থাকার উপায় এবং স্মার্টফোন আসক্তির লক্ষণ গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের প্রচুর কাজে আসবে।
আজকের এই আধুনিক সময়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ফলে আমাদের জীবন অনেকটা সহজ এবং সরল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজকালকার মোবাইল ফোন যেগুলোকে বলা হয় স্মার্টফোন (smartphone) একটি পার্সোনাল কম্পিউটার (PC) থেকে কম শক্তিশালী না।
বিশ্বজুড়ে নিজের প্রিয়জনের সাথে সংযুক্ত থাকার ক্ষেত্রে একটি মোবাইল ফোন এর গুরুত্ব অনেকটাই বেশি।
বর্তমান সময়ে, বাচ্চাদের পড়াশোনার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরাও তাদের ব্যবসার সাথে জড়িত বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে নিয়মিত একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকেন।
কিন্তু, যখন মোবাইলের এর ব্যবহার অতিরিক্ত পরিমানে করা হয় এবং এতটাই করা হয় যে মোবাইল ছাড়া কিছুই ভালো লাগছেনা, তাহলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যে অনেকটাই খারাপ।
আর যখনি আপনি নিজেকে স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে আটকে রাখতে পারবেননা বা পারছেননা, তখনি বুঝতে হবে যে আপনিও “মোবাইল আসক্তি (smartphone addiction)” এর সমস্যায় ভুগছেন।
তবে চিন্তা করবেননা, যদি আপনি সত্যি স্মার্টফোন আসক্তির থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ উপায় গুলো জেনেনিতে পারবেন।
মোবাইল আসক্তি কি – (What is mobile addiction in Bengali)
এমনিতে একটি smartphone বা আধুনিক mobile phone অবশই একটি উত্পাদনশীল হাতিয়ার যেগুলোর ব্যবহার আমরা বিভিন্ন উত্পাদনশীল কাজে অবশই করতে পারি, তবে এই মোবাইলের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আপনার কাজ-কর্ম, পড়াশোনা বা সম্পর্কের মধ্যে প্রচুর সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।
স্মার্টফোন আসক্তি আপনার সেই অবস্থা বা পরিস্থিতি কে বলা যেতে পারে যখন আপনি, অতিরিক্তি মোবাইল ব্যবহার করছেন এবং প্রয়োজন ছাড়া তবে বাধ্যতামূলক ভাবে মোবাইলের ব্যবহার করছেন, ৫ মিনিট সময়ও আপনি মোবাইল ছাড়া থাকতে পারছেননা।
এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তি বারবার নিজের mobile phone এর মধ্যে texts, emails, apps, internet ইত্যাদি ওপেন করে থাকেন, এছাড়া মোবাইলে notification না আসলেও বারবার নতুন notification এর জন্যে মোবাইলের দিকে নজর ও ধ্যান দেওয়া।
এই মোবাইল আসক্তি কে আমরা ঠিক মদ, সিগারেটে বা অন্যান্য নেশার সাথে তুলনা করতে পারি, কেননা অন্যান্য নেশা গুলোর মতোই স্মার্টফোনের আসক্তিও একটি সাংঘাতিক ক্ষতিকর নেশা।
কেননা, যখন মোবাইল আসক্তিতে থাকা কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইল সরিয়ে দেওয়া হয়, তখন তার অন্য কোনো কাজের মন বসেনা।
মোবাইল আসক্তি বলতে এর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় গুলো জড়িয়ে রয়েছে যেগুলোর কারণেই লোকেরা না চাইতেও মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার করছেন।
যেমন, অনেকে সংখ্যক লোকেদের মোবাইলে গেম খেলার আসক্তি রয়েছে, যার কারণে তারা সারা দিন মোবাইলে গেম খেলে কাটিয়ে দিচ্ছেন এবং অন্য কোনো কাজে তাদের মন লাগেনা।
এভাবেই, অনেকে আবার সারা দিন অতিরিক্ত ভাবে মোবাইলে অনলাইন ভিডিও দেখেন, সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করেন, কেও কেও খারাপ ছবি ইত্যাদি দেখেন।
এই প্রত্যেক আসক্তির কারণে লোকেরা তাদের আসল এবং বাস্তব জীবন থেকে নিজেদের ধীরে ধীরে বঞ্চিত করছেন, আর এতে তাদের সাংঘাতিক ক্ষতি হচ্ছে।
তাহলে আশা করছি আপনারা ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন যে, মোবাইল আসক্তি কাকে বলে (smartphone addiction).
মোবাইলের সাথে জড়িত মূল আসক্তি গুলো কি কি ?
- অত্যাধিক পরিমানে social networking, dating apps, texting এবং messaging এর ব্যবহার।
- অত্যাধিক web surfing, watching videos, playing games, checking news feeds এবং notification.
- সব থেকে বড় এবং খারাপ আসক্তি যেটা বর্তমানে সব থেকে অধিক ক্ষতি করছে সেটা হলো, অনলাইন পর্ন/সেক্স ভিডিও দেখার আসক্তি।
- সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোতে গিয়ে নতুন কনটেন্ট এর অপেক্ষায় সব সময় স্ক্রল করতে থাকা।
- অনলাইন গেমিং এর আসক্তি আজ বাচ্ছাদের পড়াশোনার ওপর সাংঘাতিক খারাপ প্রভাব ফেলছে বললে আমি ভুল হবোনা।
- YouTube এবং অন্যান্য video site / portal গুলোতে গিয়ে সারা দিন ভিডিও দেখা এবং সময় নষ্ট করা।
মোবাইল আসক্তির ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে ?
স্মার্টফোন আসক্তি কি ? এই বিষয়ে জানার পর, চলুন এবার আমরা সরাসরি জেনেনেই, এই mobile addiction এর ফলে আমাদের কি কি ক্ষতি হয়ে থাকে।
১. মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব
অত্যাধিক মোবাইলের ব্যবহারের ফলে সব থেকে অধিক ক্ষতি আপনার মস্তিষ্কে (brain) এর ওপরে হয়ে থাকে।
সারা দিন মোবাইল ব্যবহার করার ফলে আমাদের মস্তিষ্ক একটুকো বিশ্রাম পায়না এবং মস্তিষ্কের ওপরে প্রচুর চাপ সৃষ্টি হয়।
ফলে, লাইফস্টাইল এর সাথে জড়িত প্রচুর সমস্যা গুলো যেমন, loneliness, depression, boredom ইত্যাদি হওয়া দেখা যায়।
এছাড়া, মন ভালো না লাগা, সব সময় রাগ রাগ ভাব, অলসতা, কোনো কাজে মন না লাগা এসব সমস্যা গুলো দেখা যায় যার ফলে আপনার ব্যক্তিগত জীবন এবং সাথে কর্মজীবন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
মনে রাখবেন, এই সমস্যা গুলো আরো অধিক শক্তিশালী ভাবে দেখা দিবে যদি আপনি রাতে না ঘুমিয়ে রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন।
২. কাজে ফোকাস নেই
যখন আপনি মোবাইল আসক্তিতে ভুগছেন, তখন অবশই আপনি অন্যান্ন কাজ গুলোতে সহজে ফোকাস (focus) করতে পারবেননা।
যেকোনো সময় আপনার নিজের মোবাইল টি খুচাতে মন করবে যার ফলে পড়াশোনা বা দপ্তরের কাজে মন বসতে প্রচুর সমস্যা হবে।
৩. ঘুমের ব্যাঘাত
অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহার অবশই আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।
এটা অনেক জায়গায় বলা হয়েছে যে যখন মোবাইলের স্ক্রিনে অধিক বেশি তাকানো হয় তখন স্ক্রিনের থেকে চলে আসা আলো আমাদের মস্তিষ্কের ওপরে চাপ সৃষ্টি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
আর নিয়মিত যদি আপনি রাতে ভালো করে ঘুমাতে পারছেননা, তাহলে ধীরে ধীরে আপনার সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকবে।
৪. চোখের জন্যেও খারাপ
অবশই, মোবাইলের থেকে চলে আসা আলো আমাদের চোখের জন্যেও খারাপ, তাই যখন আপনি মোবাইল অশক্তিতে ভুগছেন তখন আপনি সারা দিন এবং রাত মোবাইল ব্যবহার করছেন, যার ফলে আপনার চোখে এর ক্ষতিকর প্রভাব অবশই পড়ছে।
৫. মানসিক চাপ
অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহারের ফলে মানসিক চাপ (stress) প্রচুর বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
দেখা গেছে যে, যে ব্যক্তিরা অত্যাধিক পরিমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন এবং এর আসক্তিতে ভুকছেন তারা অন্যান্য ব্যক্তিদের তুলনায় যেকোনো পরিস্থিতে অধিক নেগেটিভ চিন্তা করেন এবং অস্থির হয়ে পড়েন।
৬. জীবনে উন্নতি হচ্ছেনা
জীবনে উন্নতি করার জন্য নিজের পড়াশোনা, কাজ কর্ম এবং অন্যান্য জরুরি প্রত্যেক বিষয় গুলোর ওপরে আপনাকে নজর দিতে হবে।
তাই, মোবাইল আসক্তিতে থাকা ব্যক্তি কেবল মোবাইল নিয়েই সম্পূর্ণ দিন কাটিয়ে দিচ্ছে এবং সময় নষ্ট করছে।
এতে, ব্যক্তির ভবিষ্যৎ অন্ধকার এর দিকে এগিয়ে যায় এবং জীবনে কোনো ভাবেই সফলতা পাওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনা।
৭. একা জীবন কাটানো
দেখা গেছে যে মোবাইল আসক্তির ফলে ব্যক্তি প্রকৃত সমাজ থেকে দূরে চলে যায় এবং ফলে প্রকৃত জীবনে তাদের কোনো বন্ধু-বান্ধব থাকেনা বা হয়ে ওঠেনা বা তারা বন্ধু বানানোর চেষ্টাও করেনা।
এছাড়া, এই ধরণের ব্যক্তিরা সমাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখার ফলে প্রচুর লাজুক হওয়া দেখা যায় এবং একাকীত্ব (loneliness) সাথে জীবন কাটান।
সোজা ভাবে বললে, এই মোবাইল এর আসক্তির ফলে ব্যক্তি প্রকৃত জীবনে সম্পর্ক বানাতে এবং বজায় রাখতে অসফল হওয়া দেখা যায়।
স্মার্টফোন আসক্তির লক্ষণ
আপনিও কি মোবাইল আসক্তির সমস্যায় ভুগছেন ? নিচে এমন কিছু লক্ষণ গুলোর বিষয়ে বলা হয়েচে যেগুলোর যদি আপনার মধ্যেও দেখা দিচ্ছে, তাহলে হতে পারে আপনিও জানতে বা অজান্তে মোবাইল আসক্তির শিকার হয়েছেন।
- যদি, পড়াশোনা করতে বা দপ্তরে কাজ করতে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে এবং কাজ ছেড়ে কেবল মোবাইলে chatting online, texting, playing video games বা video দেখতে মন হয়ে থাকে।
- পরিবার এবং বন্ধুদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছেন ? পরিবার এবং বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্নতার মূল কারণ মোবাইল আসক্তি হওয়া দেখা যায়।
- যদি মোবাইলের ব্যাটারী শেষ হয়ে গেলে বা মোবাইল বন্ধ হয়ে গেলে আপনার মন ছটপট করছে এবং কিছুই ভালো লাগছেনা, তাহলে এটাও মোবাইল আসক্তির থেকে হতে পারে।
- প্রয়োজন ছাড়া বারবার মোবাইলের নোটিফিকেশন চেক করা, সোশ্যাল মেসেজিং এপস গুলো কাজের মধ্যে ওপেন করা এবং নতুন এসএমএস এসেছে নাকি দেখা, এগুলোও এই একই আসক্তির লক্ষণ।
- রাতে না ঘুমিয়ে মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার করাটা এর একটি সাধারণ লক্ষণ।
মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়
দেখুন, যদিওবা আপনি মোবাইল আসক্তির সমস্যায় ভুগছেন তবে কিছু সাধারণ নিয়ম এবং উপায় গুলো অনুসরণ করলে অনেক সহজে এবং তাড়াতাড়ি এই আসক্তির থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
তবে, এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে মোবাইল থেকে দূরে থাকার উপায় গুলো জেনেনিতে হবে।
কেননা, আপনি মোবাইল থেকে যত অধিক সময় দূরে থাকবেন, ধীরে ধীরে এই আসক্তি নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু হবে এবং শেষে মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
মোবাইল থেকে দূরে থাকার উপায় গুলো
চলুন, এবার আমরা এমন কিছু সেরা উপায় গুলোর বিষয়ে আলোচনা করে নেই যেগুলোর মাধ্যমে মোবাইল থেকে দূরে থাকা যাবে।
মোবাইল ব্যবহার করার সময়
আপনাকে কিছুদিন কঠোর নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে যার জন্যে সব থেকে আগে নিজেকে বুঝাতে হবে।
নিজেকে বুঝাতে হবে যে আপনি কিছু নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে মোবাইল ব্যবহার করবেননা।
মোবাইল ব্যবহার করার কিছু টাইম-টেবিল সেট করুন এবং কেবল সেই সময় টুকু মোবাইল এর ব্যবহার করুন।
এতে আপনার অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার অভ্যেস ধীরে ধীরে কমে আসবে এবং আসক্তির থেকে মুক্তি পাবেন।
মোবাইল নিজের সামনে রাখবেননা
অবশই কোথাও গেলে আপনার মোবাইল আপনাকে সাথেই রাখতে হবে, তবে কাজের সময়, পড়াশোনার সময় বা রাতে ঘুমানোর সময় আপনাকে মোবাইল দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
যখন আপনার স্মার্টফোন আপনার চোখের সামনে থাকবেনা, তখন আপনি কিছুটা হলেও কাজে মন দিতে পারবেন।
এভাবে, নিজের থেকে মোবাইল দূরের সরিয়ে রাখার নিয়ম কিছুদিন অনুসরণ করতে পারলে, ধীরে ধীরে এ আপনার অভ্যেসে পরিবর্তন হবে এবং আসক্তির থেকে মুক্তি পাবেন।
একাকীত্ব (loneliness) কাটানোর অন্যান্য উপায়
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, যেই ব্যক্তিরা জীবনে প্রচুর একা সময় কাটান তারাই এই ধরণের আসক্তির ফাঁদে পড়েন।
কারণ, যখন কোনো ব্যক্তি দিনের পর দিন একা সময় কাটাবে, তখন সে প্রচুর একাকীত্ব অনুভব করবে এবং একাকীত্ব কাটানোর উপায় হিসেবে সারা দিন মোবাইল ব্যবহার করবে।
এভাবে, দীর্ঘদিন মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এটি অভ্যেসে এবং আসক্তিতে পরিণত হয়ে যায়।
তাই, আপনিও যদি বেশিরভাগ সময় একা সময় কাটাক তাহলে নিজের একাকীত্ব কাটানোর অন্যান্য কিছু দারুন উপায় গুলো খুজুন।
জিম (GYM) যান, পার্কে ঘুরে আসুন, কোনো নতুন কোর্স করুন বা ঘরের কাজ করুন মা বাবাকে তাদের কাজে সাহায্য করুন।
মোট কথা, আপনাকে মোবাইলের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার না করে নিজের একাকীত্ব কাটানোর কিছু ভালো উপায় খুঁজতে হবে।
জরুরি নোটিফিকেশন অন রাখুন
আমাদের মোবাইলের মধ্যে যত গুলো apps রয়েছে সেই প্রত্যেক apps গুলোর notification সারা দিন আসতেই থাকে।
আর এই নোটিফিকেশন গুলোর কারণে আমাদের নজর এবং ধ্যান বার বার মোবাইলের দিকে চলে যায়।
তাই, আপনাকে কেবল নিজের কাজের apps গুলোর notification চালু (on) রাখতে হবে এবং কাজের বাইরের apps গুলোর notification বন্ধ করে রাখতে হবে।
এতে, বারবার অপ্রয়োজনীয় notification আপনার মোবাইলে আসবেনা এবং আপনি অধিক সময় নিজের মোবাইল থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
যতটা সম্ভব মোবাইলে কম এপস রাখুন
আপনার মোবাইলে যত বেশি এপস (apps) থাকবে ততটাই বেশি মন করবে মোবাইল ব্যবহার করার।
এছাড়া, অধিক apps থাকা মানে সারাদিন অধিক notification আসতেই থাকা।
তাই, কাজের বাইরের কোনো এমন অপ্রয়োজনীয় apps মোবাইলে রাখবেননা যেগুলো কেবল আপনার সময় নষ্ট করে থাকে।
সারা দিন সোশ্যাল মিডিয়াতে অন্যান্য ব্যক্তিদের ছবি এবং ভিডিও দেখে আপনি তাদেরকে like, follow, income দিচ্ছে, তবে আপনি কি পাচ্ছেন ?
পাচ্ছেন তো দূরের কথা, উল্টো আপনার জীবনের মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলো আপনার থেকে কেড়ে নিচ্ছে এই অপ্রয়োজনীয় apps এবং site গুলো।
তাই, মোবাইলে এমন কোনো apps রাখবেননা যেগুলো আপনাকে নিজের কাজের সময়ে ডিস্ট্রাক্ট (distract) করতে পারে।
নিজেকে মোবাইল থেকে দূরে রাখার এটা কিন্তু দারুন উপায়।
বই পড়ুন
যদি আপনার কাছে প্রচুর খালি সময় থাকে যার জন্যে আপনি মোবাইলের ব্যবহার প্রচুর পরিমানে করে থাকেন, তাহলে এই অভ্যেস বই পড়ার অভ্যেসে পরিণত করতে হবে।
বই পড়ার উপকারিতা প্রচুর রয়েছে, এতে আপনার একাকীত্ব কাটবে, মন ভালো লাগবে এবং এই অভ্যেসের সাথে আপনি নিজেকে মোবাইল থেকে দূরে রাখতে প্রচুর সাহায্য পাবেন।
সাধারণ কিপ্যাড মোবাইলের ব্যবহার
যদি আপনার সামনে মোবাইল থাকলে আপনি তাকে ব্যবহার না করে একেবারেই থাকতে পারছেননা, তাহলে এর দারুন একটি সমাধান হলো, “সাধারণ কিপ্যাড মোবাইল এর ব্যবহার”.
হে, স্মার্টফোনে প্রচুর apps, website এবং internet এর ব্যবহার সম্ভব, যার জন্যে আমাদের মন সব সময় মোবাইলের দিকেই আকর্ষিত হয়ে থাকে।
তাই, যদি আপনি স্মার্টফোনের জায়গাতে একটি সাধারণ keypad mobile ব্যবহার করেন, তাহলে জরুরি call বা SMS ছাড়া অন্য কিছুই সেখানে করতে পারবেননা।
এতে, মোবাইলের প্রতি আপনার অতিরিক্ত আকর্ষণ এবং রুচি কমতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে আসক্তি কমে আসবে।
অবশই, আপনি কোনো নির্দিষ্ট সময় বেছে নিয়ে নিজের smartphone ব্যবহার করুন এবং notification দেখুন।
তবে, কাজের সময়, রাতে ঘুমানোর সময় বা পড়াশোনার সময় একটি সাধারণ keypad mobile ব্যবহার করতে হবে।
আমাদের শেষ কথা,
তাহলে বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা, মোবাইল আসক্তি কি ?, স্মার্টফোন আসক্তির লক্ষণ, মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় এবং মোবাইল থেকে দূরে থাকার উপায় গুলো কি কি, সবটাই আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ভালো করে বুঝতে পেরেছেন।
আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেল আপনাদের অবশই ভালো লেগেছে।
Mobile addiction নিয়ে লিখা আমাদের আজকের আর্টিকেল সত্যি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আর্টিকেলটি শেয়ার অবশই করবেন।
এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন।